০৭:০৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫, ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ভোলা-বরিশাল সেতুর দাবিতে মানববন্ধন ভোলা জেলা ওলামা তলাবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বিলুপ্ত করায় বিমানবন্দরে এফবিসিসিএফএএ’র সংবাদ সম্মেলন ক্যারিয়ার বাংলাদেশের গোল টেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত দলিপাড়া ও দেশবাসীকে ঈদ-উল-ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন আবু জাফর আলম উত্তরা ১১ নং সেক্টর ও দেশবাসীকে ঈদ-উল-ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন অধ্যক্ষ সালাউদ্দিন ভূঁইয়া সেই গুলিবিদ্ধ ইমরান কে দেখতে গেলেন লুৎফুজ্জামান বাবর একাত্তরের ন্যায় ২৪ যোদ্ধারাও পাবে সকল সুবিধা-মুস্তাফিজ সেগুন গুম-খুনের শিকার ও চব্বিশের শহীদ পরিবারকে ঈদ উপহার দিলেন বিএনপি নেতা আমিনুল হক জাতিসঙ্ঘ শূন্য বর্জ্য দিবসে প্রফেসর ইউনূসকে অভিনন্দন জানালেন তুরস্কের ফার্স্ট লেডি চীনা বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

ইসলাম ডেস্ক :
  • আপডেট সময় : ০২:৩৯:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ জুন ২০২৩ ৮২ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস অব টাইম অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

জিলহজ্জ মাসের ফযীলত ও মাসায়েল
সংকলনে : মোঃ মাছউদুর রহমান
হযরত আব্দুল্লাহু ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন :

ما العملُ في أيامِ العشْرِ أفضلَ من العملِ في هذه . قالوا : ولا الجهادُ ؟ قال : ولا الجهادُ، إلا رجلٌ خرجَ يخاطِرُ بنفسِه ومالِه، فلم يرجِعْ بشيءٍ -(أخرجه البخاري , باب فضل العمل في أيام التشريق)

‘জিলহজ্জ্বের প্রথম দশকের চাইতে উত্তম এমন কোন দিন নেই, যে দিনগুলোর সৎ আমল আল্লাহর নিকট অধিক পছন্দনীয়।’ সাহাবায়ে কেরাম আরজ করলেন : আলস্নাহ্র পথে জিহাদও নয় হে আল্লাহর রাসূল্? তিনি বললেন : ‘আল্লাহর পথে জিহাদও নয়। অবশ্য সেই মুজাহিদ ব্যক্তির কথা ভিন্ন যে স্বীয় জান-মাল নিয়ে জিহাদে বেরিয়ে পড়ে, আর উহার কিছুই নিয়ে প্রত্যাবর্তন করে না।’ [বুখারী, দুই ঈদ অধ্যায়, হাদীস নং (৯৬৯)/ আবু দাঊদ, হাদীস নং (২৪৩৮)]
অন্য বর্ণনায় ইবনে ওমর (রাঃ) থেকে এসেছে- ‘তোমরা এই দিনগুলোতে অধিক হারে তাকবীর, তাহলীল ও তাহমীদ পাঠ কর।’ [মুসনাদে আহমদ]
১. হজ্জ্ব ও উমরাহ্ পালন করা : হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন : “এক উমরাহ্ থেকে অপর উমরাহর মাঝে সংঘটিত পাপ-সমূহ এমনিই বিমোচিত হয়। আর মাকবুল হজ্জ্বের বিনিময় নিশ্চিতভাবে জান্নাত।” [বুখারী, হাদীস নং ১৭৭৩ মুসলিম, হাদীস নং ১৩৪৯]
২. সালাত আদায় করা : ফরজ সালাতগুলি জামাতে এবং বেশি বেশি নফল সালাত আদায় করা।
৩. যাবতীয় সৎ কাজ অধিক হারে আদায় করা : যেমন- নামায, রোযা, সাদকাহ্ (দান), কুরআন তেলাওয়াত, যিকির, নিকটাত্মীয়দের সাথে সদাচার, সৎকাজের আদেশ এবং অসৎ কাজে নিষেধ, তওবা, ইস্তেগফার (ক্ষমাপ্রার্থনা) ইত্যাদি। কেননা সৎ আমলের প্রতিদান এইদিন গুলিতে যেমন অধিক হারে বৃদ্ধি পায়, তেমনি সৎ আমলই অল্লাহর মাগফিরাত ও রহমত নির্ধারিত করে।
একটি হাদীসে তিনি বলেন : “জিলহাজ্জ মাসের প্রথম দশদিনের চেয়ে আলস্নাহর নিকট অধিক মর্যাদাময় কোনদিন নেই এবং নেক আমল করার জন্য এগুলোর চেয়ে বেশি প্রিয় দিন আর নেই। অতএব তোমরা এদিনগুলিতে বেশি বেশি তাসবীহ (সুবহানাল্লাহ), তাহমীদ (আলহামদুলিল্লাহ), তাহলীল (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ) ও তাকবীর (আল্লাহু আকবার) আদায় করবে।”
অন্য বর্ণনায় : বেশি বেশি তাহলীল, তাকবীর ও আল্লাহর যিকির করবে।” (হাইসামী, মাজমাউয যাওয়াইদ ২/৩৯)
– দুআ, কুরআন তিলাওয়াত, যিকির-আযকার, সাদাকা, আত্মীয়তা বজায় রাখা ইত্যদি।
কিন্তু আমরা অনেকে উপরোক্ত আমলসমূহের তেমন গুরুত্ব না দিয়ে কেবল কুরবানী করার জন্য, পশু ক্রয় করা ও তা নিয়েই ব্যস্ত থাকি।
৪. রোজা রাখা : ইমাম নববী (রঃ) বলেন : ‘এই দিনগুলিতে রোজা পালন করা মুস্তাহাব। বিশেষ করে যে ব্যক্তি হজ্জ্বে যায়নি তার জন্য আরাফার দিবস তথা ৯ই জিলহজ্জ্বে রোজা রাখা মুস্তাহাব।’ হযরত আবু ক্বাতাদাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন : ‘আরাফার দিবসের রোজা আগত এবং বিগত এক বছরের পাপ বিমোচন করে।’ [মুসলিম, নং ১১৬২]
৫. কুরবানী করা : ঈদের দিন বা তার পরের দুদিন (জিলহজ্জ্বের ১০, ১১ ও ১২ তারিখ) ক্বুরবানী করা। কুরবানী আমাদের পিতা ইব্রাহিম (আঃ)-এর সুন্নাত। যখন আল্লাহ তা’আলা তাঁকে ইসমাইল (আঃ) এর কুবানীর মাধ্যমে একটি বিরাট কুরবানী দান করেছিলেন। আল্লাহ বলেন : فصل لربك وانحر ‘আপনার পালনকর্তার উদ্দেশ্যে নামাজ পড়েন ও কুরবানী করুন।’(কাউছার-৩)
৬. নখ ও চুল কাটা থেকে বিরত থাকা : রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন : ‘তোমাদের কেহ যদি জিলহজ্জ্বের চাঁদ দেখে এবং কুরবানী করার ইচ্ছা করে তাহলে সে যেন কুরবানী পর্যন্ত স্বীয় চুল, নখ ইত্যাদি কর্তন থেকে বিরত থাকে।’ (মুসলিম)
উম্মে সালামা রা. হতে বর্ণিত। রাসূল সা. বলেন :

إذا دخل شهر ذي الحجة وأراد أن يضحي فلا يأخذ من شعره ولا من أظفاره شيئاً.

‘জিলহজ্জ মাস শুরু হলে যে ব্যক্তি কুরবানী করতে চায় সে যেন তার চুল ও নখ না কাটে।’ (সহীহ মুসলিম, অধ্যায় : কুরবানী, অনুচ্ছেদ: জিলহজ্জ মাস শুরু হলে যে ব্যক্তি কুরবানী করবে তার জন্য চুল ও নখ কাটা নিষেধ।) কুরবানী করার পর তা কাটা যাবে।
অন্য বর্ণনায় রয়েছে : (ولا من بشرته شيئاً)” শরীরের চামড়া যেন না কাটে।” (সহীহ মুসলিম) এ প্রসঙ্গে সহীহ মুসলিম ও তিরমিযীতে আরও একাধিক হাদীস রয়েছে।
-এ বিধান যে ব্যক্তি কুরবানী করবে শুধু তার জন্য প্রযোজ্য। যাদের পক্ষ থেকে কুরবানী করা হবে যেমন, স্ত্রী, সন্তান বা পরিবারের অন্য সদস্যগণের জন্য অথবা যারা কুরবানী করবে না তাদের জন্য প্রযোজ্য নয়। অর্থাৎ তারা নখ-চুল কাটাতে পারে। এতে কোন অসুবিধা নাই।
-কোন ব্যক্তি যদি ভুল বশতঃ এগুলো কেটে ফেলে তবে তার জন্য আল্লাহর নিকট তওবা করতে হবে। এর জন্য আলাদা কোন কাফফারা নাই।
৭. তাকবীর বলা : নির্দিষ্ট এবং অনির্দিষ্ট তাকবীর উঁচু আওয়াজে বলা। মহিলাগণ নীচু আওয়াজে বলবে। তাকবীর এককভাবে বলা সুন্নাত। আরাফার দিনের ফজর থেকে শুরু করে তাশরীকের দিনের শেষ পর্যন্ত, তথা যিলহজ্জ মাসের তেরো তারিখের আসর পর্যন্ত তাকবীর বলা। আল্লাহ তায়ালা বলেন :

وَاذْكُرُوا اللَّهَ فِي أَيَّامٍ مَعْدُودَاتٍ.

“আর তোমরা আল্লাহকে স্মরণ কর নির্দিষ্ট দিনসমূহে।” (সূরা বাকারা : ২০৩)
তাকবীর বলার পদ্ধতি :

-الله أكبر، الله أكبر، لا إله إلا الله والله أكبر، الله أكبر ولله الحمد.

আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়ালিল্লাহিল হামদ।
আল্লাহর মোহাব্বতের ঘোষণা এবং তাঁর ইবাদত ও কৃতজ্ঞতার বর্হিঃপ্রকাশের উদ্দেশ্যে পুরুষদের জন্য মসজিদে, বাজারে, বাড়ীতে ও পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের পরে উচ্চ স্বরে তাকবীর পাঠ করা সুন্নাত।
-এ দিনগুলোতে নতুন জামা কাপড়, আতর-সুগন্ধি মাখা, স্ত্রী সহবাসে লিপ্ত হওয়ায় কোন অসুবিধা নাই।
-যে ব্যক্তি হজ্জে গমণ করেছেন সে যদি হজ্জের ‘هدي-হাদী’ (হজ্জের মধ্যে যে পশু জবেহ করা হয় তাকে هدي-হাদী বলা হয়) দেয়ার পাশাপাশি আলাদাভাবে (নিজ দেশে বা মক্কায়) কুরবানী দিতে চান তবে তাদেরকেও জিলহজ্জের চাঁদ উঠার পর থেকে কুরবানী জবেহ পর্যšত্ম নখ-চুল ইত্যাদি কাটা থেকে বিরত থাকতে হবে। আলাদাভাবে কুরবানী না দিলে তার উপর এ হুকুম প্রযোজ্য নয়। কারণ, হাদী এবং কুরবানী দুটি ভিন্ন জিনিস।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

আপডেট সময় : ০২:৩৯:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ জুন ২০২৩

জিলহজ্জ মাসের ফযীলত ও মাসায়েল
সংকলনে : মোঃ মাছউদুর রহমান
হযরত আব্দুল্লাহু ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন :

ما العملُ في أيامِ العشْرِ أفضلَ من العملِ في هذه . قالوا : ولا الجهادُ ؟ قال : ولا الجهادُ، إلا رجلٌ خرجَ يخاطِرُ بنفسِه ومالِه، فلم يرجِعْ بشيءٍ -(أخرجه البخاري , باب فضل العمل في أيام التشريق)

‘জিলহজ্জ্বের প্রথম দশকের চাইতে উত্তম এমন কোন দিন নেই, যে দিনগুলোর সৎ আমল আল্লাহর নিকট অধিক পছন্দনীয়।’ সাহাবায়ে কেরাম আরজ করলেন : আলস্নাহ্র পথে জিহাদও নয় হে আল্লাহর রাসূল্? তিনি বললেন : ‘আল্লাহর পথে জিহাদও নয়। অবশ্য সেই মুজাহিদ ব্যক্তির কথা ভিন্ন যে স্বীয় জান-মাল নিয়ে জিহাদে বেরিয়ে পড়ে, আর উহার কিছুই নিয়ে প্রত্যাবর্তন করে না।’ [বুখারী, দুই ঈদ অধ্যায়, হাদীস নং (৯৬৯)/ আবু দাঊদ, হাদীস নং (২৪৩৮)]
অন্য বর্ণনায় ইবনে ওমর (রাঃ) থেকে এসেছে- ‘তোমরা এই দিনগুলোতে অধিক হারে তাকবীর, তাহলীল ও তাহমীদ পাঠ কর।’ [মুসনাদে আহমদ]
১. হজ্জ্ব ও উমরাহ্ পালন করা : হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন : “এক উমরাহ্ থেকে অপর উমরাহর মাঝে সংঘটিত পাপ-সমূহ এমনিই বিমোচিত হয়। আর মাকবুল হজ্জ্বের বিনিময় নিশ্চিতভাবে জান্নাত।” [বুখারী, হাদীস নং ১৭৭৩ মুসলিম, হাদীস নং ১৩৪৯]
২. সালাত আদায় করা : ফরজ সালাতগুলি জামাতে এবং বেশি বেশি নফল সালাত আদায় করা।
৩. যাবতীয় সৎ কাজ অধিক হারে আদায় করা : যেমন- নামায, রোযা, সাদকাহ্ (দান), কুরআন তেলাওয়াত, যিকির, নিকটাত্মীয়দের সাথে সদাচার, সৎকাজের আদেশ এবং অসৎ কাজে নিষেধ, তওবা, ইস্তেগফার (ক্ষমাপ্রার্থনা) ইত্যাদি। কেননা সৎ আমলের প্রতিদান এইদিন গুলিতে যেমন অধিক হারে বৃদ্ধি পায়, তেমনি সৎ আমলই অল্লাহর মাগফিরাত ও রহমত নির্ধারিত করে।
একটি হাদীসে তিনি বলেন : “জিলহাজ্জ মাসের প্রথম দশদিনের চেয়ে আলস্নাহর নিকট অধিক মর্যাদাময় কোনদিন নেই এবং নেক আমল করার জন্য এগুলোর চেয়ে বেশি প্রিয় দিন আর নেই। অতএব তোমরা এদিনগুলিতে বেশি বেশি তাসবীহ (সুবহানাল্লাহ), তাহমীদ (আলহামদুলিল্লাহ), তাহলীল (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ) ও তাকবীর (আল্লাহু আকবার) আদায় করবে।”
অন্য বর্ণনায় : বেশি বেশি তাহলীল, তাকবীর ও আল্লাহর যিকির করবে।” (হাইসামী, মাজমাউয যাওয়াইদ ২/৩৯)
– দুআ, কুরআন তিলাওয়াত, যিকির-আযকার, সাদাকা, আত্মীয়তা বজায় রাখা ইত্যদি।
কিন্তু আমরা অনেকে উপরোক্ত আমলসমূহের তেমন গুরুত্ব না দিয়ে কেবল কুরবানী করার জন্য, পশু ক্রয় করা ও তা নিয়েই ব্যস্ত থাকি।
৪. রোজা রাখা : ইমাম নববী (রঃ) বলেন : ‘এই দিনগুলিতে রোজা পালন করা মুস্তাহাব। বিশেষ করে যে ব্যক্তি হজ্জ্বে যায়নি তার জন্য আরাফার দিবস তথা ৯ই জিলহজ্জ্বে রোজা রাখা মুস্তাহাব।’ হযরত আবু ক্বাতাদাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন : ‘আরাফার দিবসের রোজা আগত এবং বিগত এক বছরের পাপ বিমোচন করে।’ [মুসলিম, নং ১১৬২]
৫. কুরবানী করা : ঈদের দিন বা তার পরের দুদিন (জিলহজ্জ্বের ১০, ১১ ও ১২ তারিখ) ক্বুরবানী করা। কুরবানী আমাদের পিতা ইব্রাহিম (আঃ)-এর সুন্নাত। যখন আল্লাহ তা’আলা তাঁকে ইসমাইল (আঃ) এর কুবানীর মাধ্যমে একটি বিরাট কুরবানী দান করেছিলেন। আল্লাহ বলেন : فصل لربك وانحر ‘আপনার পালনকর্তার উদ্দেশ্যে নামাজ পড়েন ও কুরবানী করুন।’(কাউছার-৩)
৬. নখ ও চুল কাটা থেকে বিরত থাকা : রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন : ‘তোমাদের কেহ যদি জিলহজ্জ্বের চাঁদ দেখে এবং কুরবানী করার ইচ্ছা করে তাহলে সে যেন কুরবানী পর্যন্ত স্বীয় চুল, নখ ইত্যাদি কর্তন থেকে বিরত থাকে।’ (মুসলিম)
উম্মে সালামা রা. হতে বর্ণিত। রাসূল সা. বলেন :

إذا دخل شهر ذي الحجة وأراد أن يضحي فلا يأخذ من شعره ولا من أظفاره شيئاً.

‘জিলহজ্জ মাস শুরু হলে যে ব্যক্তি কুরবানী করতে চায় সে যেন তার চুল ও নখ না কাটে।’ (সহীহ মুসলিম, অধ্যায় : কুরবানী, অনুচ্ছেদ: জিলহজ্জ মাস শুরু হলে যে ব্যক্তি কুরবানী করবে তার জন্য চুল ও নখ কাটা নিষেধ।) কুরবানী করার পর তা কাটা যাবে।
অন্য বর্ণনায় রয়েছে : (ولا من بشرته شيئاً)” শরীরের চামড়া যেন না কাটে।” (সহীহ মুসলিম) এ প্রসঙ্গে সহীহ মুসলিম ও তিরমিযীতে আরও একাধিক হাদীস রয়েছে।
-এ বিধান যে ব্যক্তি কুরবানী করবে শুধু তার জন্য প্রযোজ্য। যাদের পক্ষ থেকে কুরবানী করা হবে যেমন, স্ত্রী, সন্তান বা পরিবারের অন্য সদস্যগণের জন্য অথবা যারা কুরবানী করবে না তাদের জন্য প্রযোজ্য নয়। অর্থাৎ তারা নখ-চুল কাটাতে পারে। এতে কোন অসুবিধা নাই।
-কোন ব্যক্তি যদি ভুল বশতঃ এগুলো কেটে ফেলে তবে তার জন্য আল্লাহর নিকট তওবা করতে হবে। এর জন্য আলাদা কোন কাফফারা নাই।
৭. তাকবীর বলা : নির্দিষ্ট এবং অনির্দিষ্ট তাকবীর উঁচু আওয়াজে বলা। মহিলাগণ নীচু আওয়াজে বলবে। তাকবীর এককভাবে বলা সুন্নাত। আরাফার দিনের ফজর থেকে শুরু করে তাশরীকের দিনের শেষ পর্যন্ত, তথা যিলহজ্জ মাসের তেরো তারিখের আসর পর্যন্ত তাকবীর বলা। আল্লাহ তায়ালা বলেন :

وَاذْكُرُوا اللَّهَ فِي أَيَّامٍ مَعْدُودَاتٍ.

“আর তোমরা আল্লাহকে স্মরণ কর নির্দিষ্ট দিনসমূহে।” (সূরা বাকারা : ২০৩)
তাকবীর বলার পদ্ধতি :

-الله أكبر، الله أكبر، لا إله إلا الله والله أكبر، الله أكبر ولله الحمد.

আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়ালিল্লাহিল হামদ।
আল্লাহর মোহাব্বতের ঘোষণা এবং তাঁর ইবাদত ও কৃতজ্ঞতার বর্হিঃপ্রকাশের উদ্দেশ্যে পুরুষদের জন্য মসজিদে, বাজারে, বাড়ীতে ও পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের পরে উচ্চ স্বরে তাকবীর পাঠ করা সুন্নাত।
-এ দিনগুলোতে নতুন জামা কাপড়, আতর-সুগন্ধি মাখা, স্ত্রী সহবাসে লিপ্ত হওয়ায় কোন অসুবিধা নাই।
-যে ব্যক্তি হজ্জে গমণ করেছেন সে যদি হজ্জের ‘هدي-হাদী’ (হজ্জের মধ্যে যে পশু জবেহ করা হয় তাকে هدي-হাদী বলা হয়) দেয়ার পাশাপাশি আলাদাভাবে (নিজ দেশে বা মক্কায়) কুরবানী দিতে চান তবে তাদেরকেও জিলহজ্জের চাঁদ উঠার পর থেকে কুরবানী জবেহ পর্যšত্ম নখ-চুল ইত্যাদি কাটা থেকে বিরত থাকতে হবে। আলাদাভাবে কুরবানী না দিলে তার উপর এ হুকুম প্রযোজ্য নয়। কারণ, হাদী এবং কুরবানী দুটি ভিন্ন জিনিস।