রমজানের ৩০ রোজার পর ৬ রোজা
শাওয়ালের ছয় রোজার তাৎপর্য ও ফজিলত

- আপডেট সময় : ০৩:২৫:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৩ ৫৮ বার পড়া হয়েছে
রমজানের সিয়ামের সাথে শাওয়াল মাসের ছয় রোজার গভীর সম্পৃক্ততা রয়েছে। কারণ এ সিয়ামদ্বয়ের একটি অপরটির পরিপূরক। রমজান মাস সিয়াম পালন করলে কেবল রমজান মাসের সিয়াম পালনের সাওয়াব পাওয়া যাবে। আর শুধু শাওয়াল মাসের ছয় রোজা পালন করলে কেবল এ ছয় রোজারই সাওয়াব পাওয়া যাবে। কিন্তু কেউ যদি এ দুটি রোজার সংমিশ্রণ ঘটায় অর্থাৎ রমজানের সবগুলো রোজা রাখার পর শাওয়াল মাসের ছয়টি রোজা রাখে, তবে সে এক বছরের সিয়াম পালনের সাওয়াব পাবে।
শাওয়ালের ছয় রোজার বিধান
রমজান পরবর্তী শাওয়াল মাসে ছয়টি সিয়াম পালন করা সুন্নাত। ইমাম ইবনে কুদামাহ রহ. বলেন, “শাওয়াল মাসের ছয় রোজা অধিকাংশ আলিমের নিকট মুস্তাহাব।” [আল-মুগনী, ইবনে কুদামাহ, খ- : ৩, পৃ-১১২]
মালেকী, শাফেয়ী ও হাম্বলী মাজহাবের অধিকাংশ ফকীহ এবং হানাফী মাজহাবের পরবর্তী আলিমগণের নিকট রমজানের পর শাওয়াল মাসের ছয় রোজা সুন্নাত। [আল মাওসূয়াতুল ফিকহিয়্যাহ আল-কুয়েতিয়্যাহ, খ- : ২৮, পৃ. ৯২]
ছয় রোজার ফজীলত
রমজানের রোজা রাখার পর শাওয়াল মাসের ছয় রোজা পালন করলে এক বছর রোজা রাখার ফজীলত অর্জিত হয়। রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-
“যে ব্যাক্তি রমজানের সিয়াম পালন করলো, তারপর শাওয়াল মাসে আরো ছয়টি সিয়াম পালন করলো সে যেন সারা বছর সিয়াম পালন করলো।” [সহীহ মুসলিম : ২৮১৫]
রমজান মাসের ৩০ দিন অবশ্যকীয় সিয়াম পালন এবং শাওয়াল মাসের ৬ দিন সুন্নাত সিয়াম মোট ৩৬ দিন সিয়াম পালনের মাধ্যমে গোটা বছরের সিয়াম পালনের তাৎপর্য এভাবে যে, একটি পূণ্য কাজের জন্য ১০টি নেকী অর্জিত হয়। কারণ আল্লাহ বলেন, “যে ব্যাক্তি একটি নেক কাজ করে তার জন্য দশটি ফজীলত রয়েছে।” [সূরা আনআম : ১৬০] সে হিসেবে ৩৬ দিনের সিয়াম ৩৬ ী ১০ = ৩৬০ দিনের ফজীলত বহন করে আনে। বছরের বাকী ৫দিন সিয়াম পালন হারাম। (দুই ঈদের
২দিন ও আইয়ামের তাশরীকের ৩ দিন অর্থাৎ ১১, ১২, ও ১৩ তারিখ)
ইসলামের এ বিধানের মুগ্ধ হয়ে খ্রিষ্টান পাদ্রী বলেন, “ছয়ত্রিশ দিন যেহেতু দশ ভাগের এক ভাগ, সুতরাং একটি গুরুত্বপূর্ণ সংখ্যার তাৎপর্য সর্বজন স্বীকৃত।”
ছয় রোজার উপকারীতা
১. এর দ্বারা পুরো বছর সিয়াম পালনের প্রতিদান অর্জিত হয়।
২. ছয় রোজা ফরজ সালাতের পর সুন্নাত ও নফল সালাতের অনুরূপ। ফরয সালাতের পর নফল সালাতসমূহ যেমন ফরয সালাতে সংঘটিত ক্রটিসমূহ পূরণ করবে তেমনি ছয় রোজাও ফরয রোজার জন্য সহযোগী।
৩. রমাজানের পর ছয় রোজা রাখার তাওফীক পাওয়া রমজানের রোজা কবুল হওয়ার নিদর্শন। কারণ, ভাল কাজের পর আবার ভাল কাজ করা তা কবুল হওয়ার নিদর্শন। এজন্যই কেউ কেউ বলেন, “ভাল কাজের প্রতিদান হলো এরপর ভাল কাজ করার তাওফীক পাওয়া।”
৪. রমজানের রোজার পর ছয় রোজা পালন মূলতঃ রমজানের রোজা রাখার যে তাওফীক আল্লাহ তা’আলা দিয়েছেন তার সে নিয়ামতের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ।
ছয় রোজা সংক্রান্ত কতিপয় জ্ঞাতব্য
১. এ রোজাগুলা ঈদের দিনের পর থেকে রাখা মুস্তাহাব। কারণ এতে ভালো কাজের জন্য প্রতিযোগিতা করা হয়। আর আল্লাহ বলেছেন, “তোমরা কল্যাণকর কাজে প্রতিযোগিতা করো।” [সূরা বাক্বারা : ১৪৮]
২. এ রোজাগুলো শাওয়াল মাসের যে কোন দিন রাখা যায়। বিরতিহীন বা ধারাবাহিকভাবে রাখতে হবে এমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই। কারণ, রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এগুলোকে শর্তহীন রেখেছেন। তিনি একসাথে রাখার বা ভেঙ্গে রাখার কোনোটিই নির্ধারণ করেননি।
৩. যে ব্যক্তি কোন বছর এ রোজাগুলো রাখে পরবর্তী বছর আবার তাকে এগুলো রাখতে হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। তবে এরূপ করতে পারলে ভাল। কেননা আল্লাহর নিকট প্রিয় আমল হলো যা ধারাবাহিকভাবে করা হয়। রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-
“নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট সর্বোত্তম আমল হলো যা ধারাবাহিকভাবে করা হয়। যদিও তা কম হোক।” [বুখারী : ৬৪৬৪]
৪. কেউ এ রোজাগুলো রাখা শুরু করলে তাকে সবগুলো রোজাই রাখতে হবে এমন কোন আবশ্যকতা নেই। কেউ যদি ছয়টি রোজার সবকটি রোজা রাখতে পারে তাহলে ভালো কথা, অন্যথায় তার কোন গুনাহ হবে না। কারণ রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন
“নফল সিয়াম পালনকারী নিজেই নিজের আমীর, চাইলে সে রোজা রাখতে পারে আবার চাইলে ভাঙ্গতেও পারে।” [জামে আস সগীর : ৭৩০১]
৫. এ রোজাগুলো রাখার আগে ভাংতি রোজাগুলো পালন করে নিতে হবে। কারণ, রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে রমজানের রোজা রাখার পর এ ছয়টি রোজা রাখে সে সারা বছর রোজা রাখার সাওয়াব পাবে।” সুতরাং আগে কাযা রোজা রাখার পর এ রোজা রাখা উচিৎ।
৬. একটি প্রথা প্রচলিত আছে যে, ভাংতি রোজার কাযা আদায়ের সময় ছয় রোজার নিয়্যাত করলে সে ভাংতি রোজার সাথে সাথে ছয় রোজাও আদায় হয়ে যায়। এটি সম্পূর্ণ ভুল। কারণ, এর পক্ষে কারো কোন দলীল নেই।
ছয়ত্রিশ দিন যেহেতু দশ ভাগের এক ভাগ, সুতরাং একটি গুরুত্বপূর্ণ সংখ্যার তাৎপর্য সর্বজন স্বীকৃত।
ছয় রোজার উপকারীতা
১. এর দ্বারা পুরো বছর সিয়াম পালনের প্রতিদান অর্জিত হয়।
২. ছয় রোজা ফরজ সালাতের পর সুন্নাত ও নফল সালাতের অনুরূপ। ফরয সালাতের পর নফল সালাতসমূহ যেমন ফরয সালাতে সংঘটিত ক্রটিসমূহ পূরণ করবে তেমনি ছয় রোজাও ফরয রোজার জন্য সহযোগী।
৩. রমাজানের পর ছয় রোজা রাখার তাওফীক পাওয়া রমজানের রোজা কবুল হওয়ার নিদর্শন। কারণ, ভাল কাজের পর আবার ভাল কাজ করা তা কবুল হওয়ার নিদর্শন। এজন্যই কেউ কেউ বলেন, “ভাল কাজের প্রতিদান হলো এরপর ভাল কাজ করার তাওফীক পাওয়া।”
৪. রমজানের রোজার পর ছয় রোজা পালন মূলতঃ রমজানের রোজা রাখার যে তাওফীক আল্লাহ তা’আলা দিয়েছেন তার সে নিয়ামতের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ।
ছয় রোজা সংক্রান্ত কতিপয় জ্ঞাতব্য
১. এ রোজাগুলা ঈদের দিনের পর থেকে রাখা মুস্তাহাব। কারণ এতে ভালো কাজের জন্য প্রতিযোগিতা করা হয়। আর আল্লাহ বলেছেন, “তোমরা কল্যাণকর কাজে প্রতিযোগিতা করো।” [সূরা বাক্বারা : ১৪৮]
২. এ রোজাগুলো শাওয়াল মাসের যে কোন দিন রাখা যায়। বিরতিহীন বা ধারাবাহিকভাবে রাখতে হবে এমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই। কারণ, রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এগুলোকে শর্তহীন রেখেছেন। তিনি একসাথে রাখার বা ভেঙ্গে রাখার কোনোটিই নির্ধারণ করেননি।
৩. যে ব্যক্তি কোন বছর এ রোজাগুলো রাখে পরবর্তী বছর আবার তাকে এগুলো রাখতে হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। তবে এরূপ করতে পারলে ভাল। কেননা আল্লাহর নিকট প্রিয় আমল হলো যা ধারাবাহিকভাবে করা হয়। রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-
“নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট সর্বোত্তম আমল হলো যা ধারাবাহিকভাবে করা হয়। যদিও তা কম হোক।” [বুখারী : ৬৪৬৪]
৪. কেউ এ রোজাগুলো রাখা শুরু করলে তাকে সবগুলো রোজাই রাখতে হবে এমন কোন আবশ্যকতা নেই। কেউ যদি ছয়টি রোজার সবকটি রোজা রাখতে পারে তাহলে ভালো কথা, অন্যথায় তার কোন গুনাহ হবে না। কারণ রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন
“নফল সিয়াম পালনকারী নিজেই নিজের আমীর, চাইলে সে রোজা রাখতে পারে আবার চাইলে ভাঙ্গতেও পারে।” [জামে আস সগীর : ৭৩০১]
৫. এ রোজাগুলো রাখার আগে ভাংতি রোজাগুলো পালন করে নিতে হবে। কারণ, রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে রমজানের রোজা রাখার পর এ ছয়টি রোজা রাখে সে সারা বছর রোজা রাখার সাওয়াব পাবে।” সুতরাং আগে কাযা রোজা রাখার পর এ রোজা রাখা উচিৎ।
৬. একটি প্রথা প্রচলিত আছে যে, ভাংতি রোজার কাযা আদায়ের সময় ছয় রোজার নিয়্যাত করলে সে ভাংতি রোজার সাথে সাথে ছয় রোজাও আদায় হয়ে যায়। এটি সম্পূর্ণ ভুল। কারণ, এর পক্ষে কারো কোন দলীল নেই।