আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে মাদরাসার ছাত্র নিহত
গুলিস্তানে আ.লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত মাদারাসার ছাত্র রেজাউলের পরিচয় পাওয়া গেছে

- আপডেট সময় : ১২:৪৮:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ জুলাই ২০২৩ ৪৬ বার পড়া হয়েছে
গত শুক্রবার ঢাকায় আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ থেকে ফেরার পথে গুলিস্তানে আওয়ামী লীগের দুই নেতার অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষে নিহত হন পথচারী হাফেজ রেজাউল (২১)। সংঘর্ষের পর আহত পাঁচজনকে ঢাকা মেডিক্যালে নেয়া হলে চারজন তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেন এবং চিকিৎসকরা রেজউলকে নিহত ঘোষণা করেন। কিন্তু রেজাউলের পরিচয় না জানায় সমস্যায় পড়েন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অবশেষে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে আঙ্গুলের ছাপ মিলিয়ে তার পরিচয় নিশ্চৎ করেন পুলিশ। তার বাড়ী শেরপুরের নকলা উপজেলার চরঅষ্টধর ইউনিয়নের নারায়ণখোলা পশ্চিমপাড়া গ্রামের বর্গাচাষি আবদুস সাত্তারের বড় ছেলে। ঢাকার যাত্রাবাড়ীর একটি মাদ্রাসায় দাওরায়ে হাদিস বিভাগের ছাত্র ছিলেন রেজাউল।
গতকাল শনিবার সকালে রেজাউলের চাচা আজাহারুল ইসলামের মুঠোফোনে খুদে বার্তা পাঠিয়ে তাঁর মৃত্যুর খবর দেয় নকলা থানার পুলিশ। পুলিশ তাঁদের ঢাকায় গিয়ে রেজাউলের লাশ আনতে অনুরোধ করে। হঠাৎ ছেলের মৃত্যুর খবরে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন রেজাউলের মা–বাবা। এ ছাড়া তিন দিনেও ছেলের লাশ না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।
এলাকাবাসী জানান, নম্র-ভদ্র সদালাপী রেজাউল রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন না। ময়মনসিংহের জামিয়া ফয়জুর রহমান মাদ্রাসা থেকে পড়া শেষ করে ঢাকায় দাওরায়ে হাদিস পড়তে যান। কোরবানির ঈদের কয়েক দিন আগে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বাড়িতে আসেন। পরে গত বৃহস্পতিবার ডেঙ্গু পরীক্ষার জন্য আবার ঢাকায় যান।
হাফেজ রেজাউল ছবি
নিহত রেজাউলের বাড়ি ব্রহ্মপুত্র নদের শাখা মিরগী নদীর পাড় ঘেঁষে। বাড়ির পাশে নারায়ণখোলা পশ্চিম আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়। আশপাশে আর কোনো ঘরবাড়ি নেই। বাড়ির দক্ষিণে বাঁশঝাড়ে পারিবারিক কবরস্থানে রেজাউলের জন্য কবর খোঁড়া হয়েছে।
রেজাউলের বড় দুই বোন ও মামা লাশ আনতে ঢাকায় গেছেন। লাশ আনতে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করেছেন। কিন্তু দুপুর পর্যন্ত তাঁরা লাশ বুঝে পাননি বলে জানা যায়।
প্রতিবেশী ও স্বজনরা জানান, সব সময় হাসিখুশি রেজাউল কোনো সাতপাঁচে ছিলেন না। তাঁর ছোট ভাইও হাফেজ। রাজনীতি করতেন না। রোজার মাসে স্থানীয় মসজিদে খতম তারাবী পড়ান। এই ছেলে বিনা কারণে মারা গেলেন। অথচ চেয়ারম্যান ছাড়া প্রশাসনের কোনো লোক বা জনপ্রতিনিধি খোঁজও নিলেন না।